Header Ads 720=90

মর্গের ভেতর তরুণীর মরদেহ ধর্ষণ: আদালতে লাশবাহকের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি

 



ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে ঘটেছে এক ভয়াবহ ও মানবিকতাবিরোধী ঘটনা। ২০ বছর বয়সী এক তরুণীর মরদেহকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন লাশবাহক আবু সাঈদ (১৯)। বুধবার বিকেলে ময়মনসিংহ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরিফুল হকের আদালতে তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

আবু সাঈদ ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার খন্দকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় তিন বছর ধরে হালুয়াঘাট থানা থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে মরদেহ পরিবহনের কাজ করতেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার (১৯ অক্টোবর) হালুয়াঘাটের একটি গ্রামে শেরপুর সরকারি কলেজের অনার্স শিক্ষার্থী ২০ বছর বয়সী এক তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবার ও পুলিশের প্রাথমিক ধারণা ছিল এটি আত্মহত্যা। মেয়েটির রেখে যাওয়া দুই পাতার চিঠিতেও এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়—তাতে লেখা ছিল, “আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী আমার দুর্ভাগ্য, এই দুনিয়া থেকে মন উঠে গেছে, তাই আমি চলে যাচ্ছি।”

পরদিন সোমবার সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।

কিন্তু এরপরই ঘটে অমানবিক এক ঘটনা। দুপুরের দিকে প্রথমবার মরদেহ মর্গে রেখে আসার পর আবু সাঈদ দ্বিতীয়বার সেখানে প্রবেশ করেন ‘সুরতহালের কাগজ আনার’ অজুহাতে। তখনই তিনি তরুণীর মরদেহ ধর্ষণ করেন বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে।

ময়নাতদন্তের সময় ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এ এন এম আল মামুন মরদেহে ধর্ষণের আলামত পান। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ রাতেই আবু সাঈদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।

ময়মনসিংহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “এটি অত্যন্ত বিরল ও নৃশংস ঘটনা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়ার পরই তদন্ত শুরু করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবু সাঈদ অপরাধের কথা স্বীকার করে জানান, এ ধরনের কাজ তিনি জীবনে প্রথমবার করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আবু সাঈদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, লাশ অবমাননা এবং অন্যান্য আইনে মামলা করা হয়েছে। আদালতে তোলা হলে সেও স্বীকারোক্তি দিয়েছে।”

মানবিকতার সীমা অতিক্রম করা এই ঘটনা এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। ময়নাতদন্ত কক্ষে এমন জঘন্য আচরণ শুধু সমাজ নয়, পুরো মানবসভ্যতার জন্যই এক গভীর লজ্জার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.